আমি যখন চট্টগ্রামে এসে একটা প্রাইভেট ক্লিনিকের ইঞ্চার্জ এর দায়িত্ব নিলাম তখন এসে দেখলাম অসহায় রোগীদের উপর চাপিয়ে দেয়া অহেতুক কিছু টেস্ট, বর্তমানে রোগীদের উপরে এই টেস্ট নামক বোঝা চাপিয়ে দিয়ে ডাক্তার আর ক্লিনিকের মালিকেরা যে ব্যবসা শুরু করেছে সেটা অনেকটাই একটা শিশুকে চৌদ্দটা বই চাপিয়ে দেয়ার মতোই। পার্থক্য শুধু এইটুকুন ক্লিনিকে ভুক্তভোগী হচ্ছে রোগী আর এইখানে ভুক্তভোগী হচ্ছে শিশু তবে উভয়েই ভুক্তভোগী। আমরা যখন ক্লাশ ফাইভ থেকে সিক্সে উঠলাম তখন আমাদের বই ছয়টা থেকে বেড়ে হয়ে গেল এগারটা আর এখন হচ্ছে চৌদ্দটা। মনের মধ্যে মাঝেমাঝে ঘোরতর একটা প্রশ্ন জাগে –শিশুদের এই ব্যাগ কি শুধুই বইয়ের ভারে ভারী হয় নাকি আরও অনেককিছুই এই ব্যাগে থাকে? প্রকৃতপক্ষে একটা শিশুর এই স্কুলব্যাগ ভারী নাহলে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির মানিব্যাগ ভারী হয়না, এই স্কুলব্যাগ ভারী নাহলে স্কুল-ব্যবসা সংশ্লিষ্টদের বাজারের ব্যাগ ভারী হয়না, এই স্কুলব্যাগ ভারী নাহলে প্রকাশকরা তাদের বাড়তি বই বিক্রি করে স্ত্রীর শপিংব্যাগ ভারী করতে পারেনা, এই স্কুলব্যাগ ভারী নাহলে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার পরিদর্শকদের সাইড ব্যাগ ভারী হয়না। একটি শিশু আসলে এই স্কুলব্যাগের মাধ্যমে কতশত জনের বোঝা বইছে সেটা কি শিক্ষা অধিদপ্তর জানে? তাইতো আজকে কিছু ডাক্তার মৃত রোগী অপারেশন করে বিল নেয়, কিছু শিক্ষক অহেতুক বই সিলেবাসে যোগ করে কমিশন খায়। এতজনের ভরণপোষণের দ্বায়ভার যে শিশুর উপর তার স্কুলের ব্যাগ হালকা হয় কি করে?
যে প্রত্যাবর্তনের নাম ভালবাসার আবর্তন
১৯৯৫-৯৬ সালের দিক থেকেই আমার রুমের ওয়ালে একটা পোষ্টার আজও অক্ষত অবস্থায় আছে, যেখানে লিখা আছে "তোমারা যদি আমাকে মেরে ফেল তাতেও আমার কোন আপত্তি নেই শুধু আমার লাশটা বাঙ্গালীর হাতে পৌঁছে দিয়ো”
তার উপরে বড় করে লিখা ১০ ই জানুয়ারি “বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস”
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে আমার মায়ের অনেকগুলা বাঁধায় করা কারুকাজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে
অথচ এই পোষ্টারটা আজও উম্মুক্ত অবস্থাতেই অক্ষত আছে। আর থাকবেইবা না কেন? এ যে
বাঙ্গালী জাতির জনক আর জনক কে কি কোন শক্তি মুছে ফেলতে পারে?? পারেনা । তবে বাঙ্গালীকে
নিয়ে যে স্বপ্ন ৪৫ বছর পূর্বে পশ্চিম পাকিস্থানের কাছে থেকে মুক্তি নিয়ে এসেছিলেন
সে স্বপ্ন ৪২ বছর পূর্বেই মোস্তাকেরা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে কিন্তু স্বপ্ন কি এত সহজে
মুছে ফেলা যায়? এ স্বপ্ন যে রাষ্ট্রপতি মুজিবের স্বপ্ন যার প্রত্যাবর্তন ঘটেছিল
সাড়ে সাত কোটি মানুষের ভালাবাসায় যে প্রত্যাবর্তনের সন্ধি বিচ্ছেদ ভালবাসার
আবর্তন।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)