পূর্বেই বলিয়াছিলাম মোর পিতা বিপণীর কর্ম সমাপ্ত করিয়া অধিক নিশিতে গৃহে আসিয়া
উপস্থিত হইত। পূর্বের ন্যয় সেই
নিশিতেও অনেক্ষন বাদে গৃহে আসিয়া উপস্থিত হইল পার্থক্য কেবল মুখমণ্ডলে পরিলক্ষিত
হইল বুঝিতে বাকী রহিলনা বালির পিতা মোর পিতার নিকটে নালিশ করিয়াছে। পরিষ্কার স্মরণে আসে
সময়টা আছিল রমজান মাস, সেহেরী ভক্ষন করিতে উঠিয়া পিতা মোরে জিজ্ঞেস করিয়া বসিল আমি
বালিরে চিনি কি না (বালির পিতার নাম উল্লেখ পূর্বক)? ইহাও সত্য যে তখন অব্দি মোর বালির পিতার নাম
অজানাই রহিয়াছিল। পিতা পুত্রের কথপোকথন
শুনিয়া মাতার বুঝিতে আর বাকী রহিলনা কি ঘটিয়াছে ইহার ফলে নারীসুলভ আচরণ করিয়া সারা
বাড়ী মাথায় তুলিয়া ফেলিল; আমিও "চোরের মায়ের বড় গলা" বাক্যটি যে অধিক সত্য
তাহার পুনরাবৃত্তি ঘটাইলাম। এতক্ষণ পিতাজি মোর সহিত স্বাভাবিক ভাবেই বাক্য বিনিময়
করিতেছিল তাহার সহিত অধিক উপদেশ দান কিন্তু মাতার সহিত মোর উচ্চস্বরে বাক্য বিনিময়
করিতে দেখিয়া আপন বসিবার স্থান হইতে উঠিয়া মোর কপোলে সশব্দে একখান চপেটাঘাত করিয়া
বসিলেন। চপেটাঘাত খানা এতটাই
প্রবল রহিয়াছিল যে পরবর্তীতে মোর পিতৃজন্মে আর একখান ও কপালে জোটেনাই। চপেটাঘাত প্রদত্ত
হইয়া মনঃক্ষুণ্ণ করিয়া লেপ মুড়ি দিয়া ঘুমাইয়া পরিলাম। ঘুমানোর পূর্বে মোর মাতা তাহার মস্তকে হস্ত
রাখিয়া কসম কাটিয়া লইল যাহাতে বালিরে ভুলিয়া যায়। পরবর্তী দিবসে ঘুম হইতে উঠিয়া নিশিতে ঘটিয়া
যাওয়া ঘটনা স্মরণে আসিবা মাত্র মনোমধ্যে চিনচিন
আওয়াজ অনুভূত হইল। বালিরে লইয়া ঘুরিতে
যাওয়ার পূর্বপরিকল্পনা বিনষ্ট হইল। প্রয়জোনের সাপেক্ষে কয়েক দিবসের তরে পিরিতির আধিক্য বর্জন
করিয়া সাধারণের ন্যয় অসাধারণ বেশ ধরিলাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন